বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:১৭ পূর্বাহ্ন
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি::
ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলায় শিক্ষা অফিসে ২০১৯-২০ অর্থবছরের সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের প্রায় কোটি টাকা নয়-ছয় করার অভিযোগ উঠেছে। গত অর্থবছরে এ উপজেলার ৭৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রুটিন মেরামত, ক্ষুদ্র মেরামত, প্লেয়িং এক্সেসরিজ, ওয়াস ব্লক ও অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রায় ১ কোটি ৪২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। বরাদ্দকৃত অর্থ ৭৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় সভাপতির যৌথ একাউন্টে জুন মাসে ট্রান্সফার করেন শিক্ষা অফিসার মোঃ মকছেদুর। উক্ত টাকার কাজ সর্বোচ্চ ১ মাসের মধ্যেই শতভাগ সমাপ্ত করা সম্ভব বলে নির্মাণ কাজের সাথে জড়িত অনেক স্বনামধন্য ও অভিজ্ঞ রাজমিস্ত্রিগণ জানান। অথচ ৩ মাস আগেই টাকা শিক্ষকদের একাউন্টে ট্রান্সফার হওয়ার পর তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের একাউন্ট থেকে প্রধান শিক্ষকরা টাকা উত্তোলন করে সিংহভাগ টাকা পকেটস্থ করেন। এসব টাকা বেশিরভাগ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ মকছেদুর রহমান ও তার কয়েক সহযোগী মিলে পকেটস্থ করেন। ফলে শিক্ষা অফিসার শিক্ষকদের কাছ থেকে কাজ বুঝে নিতে ব্যর্থ হন। এই দূর্নীতির ব্যাপারে গণমাধ্যম কর্মীরা তথ্য উদঘাটন করলে শিক্ষা প্রশাসনের টনক নড়ে। কিছু প্রতিষ্ঠান নতুন করে নামমাত্র কাজ শুরু করেছে। দূর্নীতির প্রায় ১ কোটি টাকা শিক্ষা অফিসার তার লোকজন ও কয়েক জন শিক্ষক নেতা মিলে লোপাট করায় সরকারের টাকা দেওয়ার মহৎ উদ্দেশ্য ভেস্তে গেছে ও সরকারের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।
যে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে ব্যাপক দূর্নীতি ও ঘাপলা হয়েছে তাদের মধ্যে- বাজেবকসা, পাটগাঁও, গুয়াগাঁও, বনগাঁও উত্তরপাড়া, ভোমরাঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অন্যতম। এসব প্রকল্পে ব্যাপক অর্থ ঘাপলা হওয়ার পিছনে শিক্ষা অফিসার মোঃ মকছেদুর রহমান ও তার সহযোগীরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত বলে জানা গেছে। এলাকার সুশিল সমাজ তাদের দৃষ্টান্তমলক শাস্তি দাবী করেন।
পাটগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধনেশ্বর বলেন, আমাদের স্কুলে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টকা বরাদ্দ হয়। এখান থেকে ১৮% ভ্যাট দিয়ে বাকি টাকা আমাদের স্কুলে কাজ করতে হবে, কিন্তু আমাদের ক্লাস্টার এর সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার মনজুরুল স্যার বলেন ৫০হাজার টাকার কাজ করবেন পরে। বাকি টাকার কথা বললে তিনি বলেন আমাদের কাছে অর্থাৎ আফিসের কাছে থাকবে। তার উপরে তো আমরা কথা বলতে পারিনা, কারণ তিনি আবার আমাদের স্কুলের সভাপতি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হারুনুর রশিদ জানান, দূর্নীতি হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপরোক্ত ব্যাপারে উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার মনজুরুল বলেন- আমি কিছু জানি না, তবে কাজ হয়নি। কাজ করা হবে বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি ভরাট করতে হবে।
অপরদিকে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোকছেদুর রহমান এর মতামত চাওয়া হলে এ ব্যাপরে তিনি কোন মতামত দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে সচেতনমহল উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।